দীপাবলি শব্দের অর্থ কি । দীপাবলী কেন পালন করা হয় । দীপাবলী মাহাত্ম্য- What is Diwali

দীপাবলি শব্দের অর্থ কি । দীপাবলী কেন পালন করা হয় । দীপাবলী মাহাত্ম্য- What is Diwali

দামোদর বা কার্তিক মাসের প্রতিটি দিনই সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে অধিক মাহাত্ম্যপূর্ণ কিন্তু দামোদর বা কার্তিক মাসের এই দীপাবলির দিনটি অধিক মাহাত্ম্যপূর্ণ কারণ এই দীপাবলির দিনে  ভগবান শ্রী রামচন্দ্র তার ভাই লক্ষণ ও মা সীতাকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে আসেন এবং দ্বাপর যুগে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দাম বন্ধন লীলা করেন। 

 

দীপাবলি শব্দের অর্থ কি 

দীপাবলি শব্দের অর্থ হলো- (দীপ+আবলি) অর্থাৎ দীপ মানে হল প্রদীপ আর আবলি শব্দটির অর্থ হলো অনেক অর্থাৎ অনেকগুলেঅ প্রদীপের সমষ্টি অর্থাৎ অনেকগুলো প্রদীপের সমাহার। দীপাবলি মহোৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মহাসমারোহে পালন করে থাকেন।  এ দীপাবলি মহোৎসব পালিত হওয়ার ৮টি নীলা সম্পর্কিত তার মধ্যে দুটি নীলার কারণে অধিক মহিমান্বিত এই দীপাবলি দিনটি-

 

দীপাবলী কেন পালন করব

 প্রথমত এই দীপাবলি দিনে নীলা প্রসত্তম ভগবান শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কা বিজয় করে অযোধ্যাতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং সেই দিন অযোধ্যা বাসি পুরো অযোধ্যা নগরী প্রদীপ প্রজনন করে ভগবান শ্রী রামচন্দ্র কে স্বাগত জানিয়েছিলেন।

এটি ছিল তেতা যুগের কাহিনী তখন অযোধ্যা নগরীর রাজা ছিলেন রাজা দশরথ তার চার পুত্র ছিল বড় পুত্রের নাম ছিল রাম তারপরে ভরত, লক্ষণ এবং শত্রুঘ্ন।কিন্তু পুরো অযোধ্যা বাসীর  প্রাণ কেন্দ্রে ছিল ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ।ভগবান রামচন্দ্র ছিলেন মর্যাদা পুরুষোত্তম তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে সবার মান বজায় রাখতেন এজন্য অযোধ্যা বাসীরা সবাই সবার মন থেকে ভগবান রামচন্দ্র কে ভালোবাসতেন।

 

  যখন অযোধ্যা বাসি শুনলেন যে ভগবান রামচন্দ্রের ১৪ বৎসর বনবাস তখন পুরো অযোধ্যা বাসি নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল। কারণ ভগবান রামচন্দ্র ব্যতীত তারা কোন কিছুই চিন্তা করতে পারতেন না আর যেহেতু ভগবান রামচন্দ্র ছিল তাদের সকল আনন্দের উৎস তাই তারা এ কথাটি মেনে নিতে পারেনি। এবং যেদিন ভগবান রামচন্দ্র লক্ষণ এবং মা সীতা বনবাসে গিয়েছিল সেদিন থেকে অযোধ্যা বাসি বাকি ১৪ বছর ছিল নিস্ প্রদীপ। কারণ এই ১৪ টি বৎসর পুরো অযোধ্যা বাসি ভগবান রামচন্দ্রের সাক্ষাৎ কৃপা লাভ করতে পারেনি এবং ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের কাছ থেকে আনন্দ উপভোগ করেনি তাই পুরো অযোধ্যা বাসি ছিল নিস্ প্রদীপ।

 

 যখন নিলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করে লঙ্কা বিজয় করে মা সীতাকে নিয়ে আসেন এবং যেদিন অযোধ্যায় আসবেন তার আগের দিন  মহাবলী হনুমান অযোধ্যাতে এসে সেই খবরটি দিয়েছিল তখন পুরো অযোধ্যা বাসি এই খুশিতে আত্মহারা হয়েছিলেন এবং তারা সকলে মিলে পুরো অযোধ্যার সকল নগরী, প্রতিটি ঘর, প্রতিটি বারান্দা, প্রতিটি রাস্তা, প্রদীপ প্রজনন করে আলোকিত করেছিল। সেদিন পুরো অযোধ্যা প্রদীপের আলোতে আলোকিত হয়েছিল ।

 

আর যখন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তার ভাই লক্ষণ এবং মা সীতার নিয়ে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন করেন। তখন সেই সময়টি ছিল সন্ধ্যা কাল। তখন পুরো অযোধ্যা বাসী ভগবান শ্রীরামচন্দ্রকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল যেন পুরো অযোধ্যা নগরীর সকল প্রজা এমন কি সমস্ত জীব প্রাণ ফিরে পেল। এবং সেই দিনটি ছিল এই দীপাবলির দিন।

 সেদিন থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই দীপাবলি দিনে প্রদীপ প্রজনন করে তাদের হৃদয়ে লীলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী রামচন্দ্র কে স্বাগত জানান যেন ভগবান তাদের হৃদয়ে অবস্থান করতে পারেন তাই এই দীপাবলির দিনটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অধিক মাহাত্ম্যপূর্ণ ।

 

 দ্বিতীয়টি হলো এই দীপাবলির দিনে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার দাম বন্ধন লীলা করেছিলেন তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দীপাবলির দিনটি অধিক মাহাত্ম্যপূর্ণ । দামোদর মাসের প্রতিদিনই প্রতিটি সনাতন ধর্মালম্বী ভগবান এর সামনে তিলের তেল অথবা ঘৃত প্রদীপ দ্বারা আরতি করে থাকেন । 

 

কিন্তু দীপাবলির এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করে । বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রতিটি মন্দিরে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকন প্রতিষ্ঠাতা ও আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের কৃপায় প্রতিটি ইসকন্ মন্দিরে এই দীপাবলি উৎসবটি পালিত হয়ে আসছে। এবং শ্রীল প্রভাপাদের কৃপায় সারা পৃথিবীর মানুষ ভগবানের এসব লীলা সম্পর্কে জানতে পারছে। তাই আমাদেরও উচিৎ মহা সমারোহে এই দিনটি পালন করা।