দশবিধ নাম অপরাধ কি? দশবিধ ধাম অপরাধ কি? ভক্তি জীবন উন্নতির একমাত্র চাবিকাঠি।

দশবিধ নাম অপরাধ কি? দশবিধ ধাম অপরাধ কি? ভক্তি জীবন উন্নতির একমাত্র চাবিকাঠি।

  ভক্তি জীবনে আমরা যদি উন্নতি লাভ করতে চাই। তাহলে আমাদের অবশ্যই এই সকল নাম অপরাধ, আরো অন্য যে সকল অপরাধ আছে সে সকল বিষয়ে খুবই সচেতন থাকতে হবে এবং এগুলো  এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। 

 

     মাঝে মাঝে আমাদের ভগবানের নামের প্রতি রুচি হারিয়ে যায়।ভগবানের নাম জপ করতে আর ভালো লাগেনা।  ভগবানকে প্রণাম করতে, ভগবানের মন্দিরে যেতে, গ্রন্থ পড়তে, বৈষ্ণব সঙ্গ করতে আগ্রহ থাকে না । তখন বুঝতে হবে যে আমি এই সকল অপরাধের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি। তাই আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে এই সকল অপরাধ থেকে দুরে থাকতে।আজকে আমরা দেখব যে  দশবিধ নাম অপরাধ এবং ধাম অপরাধ কি কি? 

 

দশবিধ নাম অপরাধ কিঃ- 

 

    ১। যে সমস্ত ভক্ত ভগবানের দিব্য নাম প্রচার করার জন্য নিজেদের সর্বতোভাবে উৎসর্গ করেছেন তাঁদের নিন্দা করা। 

 

    ২। শিব, ব্রহ্মা আদি দেবতাদের নাম ভগবানের নামের সমান অথবা তা থেকে স্বতন্ত্র বলে মনে করা ( কখনও কখনও নাস্তিকেরা মনে করে যে, যে-কোন দেবতাই পরমেশ্বর ভগবান  শ্রীবিষ্ণুর সমপর্যায়ভুক্ত। কিন্তু যথার্থ ভক্ত জানেন যে, সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতারাও ভগবান বিষ্ণুর সমান অথবা তাঁর থেকে স্বতন্ত্র হতে পারেন না। তাই, কেউ যদি মনে করে যে,  'দুর্গা,' 'দুর্গা ', অথবা ' কালী' 'কালী' উচ্চারণ করা ' হরে কৃষ্ণ  মহামন্ত্র' উচ্চারণের সমান, তাহলে সেটা মন্ত বড় অপরাধ) । 

 

    ৩। গুরুদেবকে অবজ্ঞা করা। 

 

    ৪। বৈদিক শাস্ত্র অথবা বৈদিক শাস্ত্রের অনুগামী শাস্ত্রের নিন্দা করা। 

 

    ৫। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করার মাহাত্ম্যকে কাল্পনিক বলে মনে করা।  

 

    ৬। ভগবানের নামে অর্থ বাদ আরোপ করা । 

 

    ৭। নাম বলে পাপ আচরণ করা । (ভগবানের নাম কীর্তন করার ফলে সবরকমের পাপ বিনষ্ট হয় । কিন্তু কেউ যেন মনে না করে যে, সে পাপ করতে থাকবে এবং 'হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র' কীর্তন করার ফলে সেই পাপ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এই ধরনের বিপজ্জনক মনোভাব অত্যন্ত অপরাধজনক এবং এই মনোভাব থেকে মুক্ত হতে হবে) । 

 

     ৮। 'হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র' উচ্চারণ করাকে বৈদিক কর্মকাণ্ডে বর্ণিত পুণ্যকর্ম বলে মনে করা। 

 

     ৯। শ্রদ্ধাহীন ব্যক্তিকে ভগবানের দিব্য নামের মহিমা সম্বন্ধে উপদেশ করা। (ভগবানের দিব্য নাম কীর্তনে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে, কিন্তু ভগবানের দিব্য নামের অপ্রাকৃত মহিমা সম্বন্ধে প্রথমেই তাকে কিছু বলা উচিত নয় । যে সমস্ত মানুষ অত্যন্ত পাপী, তারা ভগবানের নামের অপ্রাকৃত মহিমা যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারে না, এবং তাই সে সম্বন্ধে তাদের কিছু না বলাই ভাল)। 

 

     ১০। ভগবানের নামের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস না থাকা এবং তাঁর অগাধ মহিমা শ্রবণ করার পরও বিষয়াসক্তি বজায় রাখা। প্রতিটি বৈষ্ণব ভক্তেরই কর্তব্য হচ্ছে, ইন্সিত সিদ্ধি লাভ করার জন্য এই সমস্ত অপরাধগুলি থেকে মুক্ত হওয়া । 

 

 

দশবিধ ধাম অপরাধ কিঃ- 

 

   ১। শিষ্যের নিকট শ্রীধামের মাহাত্ম্য প্রকাশকারী গুরুদেবকে অপমান বা অসম্মান প্রদর্শন করা । 

 

   ২। শ্রীধামকে অস্থায়ী বলে মনে করা । 

 

   ৩। শ্রীধামবাসী অথবা শ্রীধাম যাত্রীগণের কারও প্রতি উৎপীড়ন বা অনিষ্ট করা অথবা তাহাদিগকে সাধারণ জড়লোক বলে মনে করা। 

 

   ৪। শ্রীধাম বাসকালে জড়কর্ম করা।  

 

   ৫। বিগ্রহ ও অর্চন ও শ্রীনাম কীর্তনকালে অর্থসংগ্রহ করা ও তদ্বারা ব্যবসা করা । 

 

   ৬। শ্রীধামকে বাংলার মতো কোন জড়দেশ বা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা, শ্রীধামকে কোন দেবতার সহিত সম্বন্ধযুক্ত স্থানের সমান বলে মনে করা অথবা শ্রীধামের সীমা নিরূপণের চেষ্টা করা। 

  

   ৭। শ্রীধাম বাসকালে পাপকর্ম করা । 

 

   ৮। বৃন্দাবান ও নবদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করা । 

 

   ৯। শ্রীধামের মাহাত্ম প্রকাশকারী শাস্ত্রের নিন্দা করা ।  

 

   ১০। শ্রীধামের মাহাত্ম্যকে কল্পিত মনে করে অবিশ্বাস করা ।