একাদশী কি ? একাদশী কেন পালন করা উচিৎ- What Is Ekadashi
একাদশী কি….
“একাদশী” একটি চান্দ্র তিথি চাদের শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি সনাতন ধর্ম মত অনুসারে পূর্ণ তিথি হিসেবে বিবেচিত। সনাতন ধর্মে যে সকল উপবাস রয়েছে তার থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ একাদশী ব্রত উপবাস তাই এই একাদশী ব্রত উপবাস অবশ্যই পালনীয়। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তার লীলা বিলাসের প্রথম থেকেই একাদশী উপবাসের কথা প্রবর্তন করে ছিলেন শ্রীল জীব গোস্বামী তার ভক্তি সন্দর্ভ গ্রন্থে স্কন্ধ পুরাণের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে সে তার পিতা-মাতা ভাই এবং গুরু হত্যাকারী সে যদি বৈকন্ঠ থেকেও উন্নীত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়।
একাদশী কেন পালন করা উচিত?
সনাতন ধর্মে যত প্রকার তিথি রয়েছে তার থেকে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এই একাদশী তিথি যা ভগবান স্বয়ং আবির্ভূত হয়েছেন এই একাদশী তিথি পালন করতে বিভিন্ন শাস্ত্রে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এখানে সকলকে একাদশী ব্রত পালন করতে অর্থাৎ কি শিশু, কি পুরুষ, কি নারী প্রত্যেককে অর্থাৎ ৮ থেকে ৮০ বছর পর্যন্ত সবাইকে একাদশী ব্রত পালন করতে হবে ।এখন দেখব একাদশীর সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মীয় শাস্ত্রে কি বর্ণনা করা হয়েছে।
১.শ্রী যমরাজ ব্রাহ্মণ কে বলেছেন হে ব্রাহ্মণ যাদের পুত্র ও পৌত্র একাদশী ব্রত করে আমি শাসনকর্তা যম হয়েও বিশেষ রূপে তাদের নিকট ভীত হই। যারা একাদশী ব্রত পরায়ণ সেই মহাত্মারা বল পূর্বক স্বীয় শতপুরুষ উদ্ধার করেন। (পদ্মপুরাণ)
২.একাদশীতে যে উপবাস ইহাই সার, ইহাই তত্ত্ব, ইহাই সত্য,ইহাই ব্রত, ইহাই সম্যক প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ)
৩.সকল পুরানে সকল মুনিগণের এই মত যে একাদশীতে উপবাস করলে সকল পাপ হতে মুক্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই । (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ)
৪.যিনি একাদশী ব্রত পরিত্যাগ করে অন্য ব্রতের উপাসনা করেন তার হাতের মহা মূল্যবান রত্ন পরিত্যাগ করে লোহা যাচনা করা হয়। (তথ্যসাগর)
৫. দেবাদী দেব ভগবান শিব দুর্গা দেবীকে বলেছেন হে মহাদেবী, যারা হরিবাসরে (একাদশীতে) ভোজন করে যমদূতগণ যমালয়ে নিয়ে তাদের অগ্নিবর্ণ তীক্ষ্ণ লোহাস্ত্র তাদের মুখে নিক্ষেপ করে। (স্কন্ধ পুরান)
৬.হে রাজন যতদিন আয়ু থাকবে ততদিন একাদশী উপবাস থাকবেন। (অগ্নী পুরাণ)
৭. বিধবা নারী এবং মতিগণ (তেজস্বী) যদি একাদশী ব্রত না করে তাহলে প্রলয় কাল পর্যন্ত তাদের অন্ধকারময় নরকে পচে মরতে থাকে । (শারদীয় পুরান)
৮.যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে সে তার পিতা-মাতা ভাই এবং গুরু হত্যাকারী সে যদি বৈকুন্ঠালোকে উন্নীত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়।
তাই আমাদের সকলের উচিত ভক্তি সহকারে শাস্ত্রের নির্দেশ অনুযায়ী এই একাদশী তিথি পালন করা । তাহলে আমরা সকল প্রকার পাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারবো এবং অবশেষে আমাদের প্রকৃত আলোয়ে ফিরে যেতে পারবো ।