কিভাবে পাপ পুরুষের সৃষ্টি হল এবং তার রূপ ! পাপ পুরুষ কোথায় অবস্থান করেন ! পঞ্চ রবিশস্য কি কি??

কিভাবে পাপ পুরুষের সৃষ্টি হল এবং তার রূপ ! পাপ পুরুষ কোথায় অবস্থান করেন ! পঞ্চ রবিশস্য কি কি??

কিভাবে পাপ পুরুষের সৃষ্টি হল এবং এর রূপ”” 

মহর্ষি ব্যাসদেব তখন বলতে লাগলেন সৃষ্টির  প্রারম্ভে পরমেশ্বর ভগবান এই  জড় সংসারে স্থাবর জঙ্গম সৃষ্টি করলেন  মর্ত্যলোকবাসী মানুষদের শাসনের জন্য একটি পাপ পুরুষ নির্মাণ করলেন  ।  সেই পাপ পুরুষের অঙ্গ গুলি বিভিন্ন পাপ দিয়ে নির্মিত হল   পাপ পুরুষের মাথাটি ব্রহ্ম হত্যা পাপ দিয়ে, চক্ষু দুটি মধ্যপান, মুখ স্বর্ণ অপহরণ, দুই কর্ণ গুরুপত্নী গমন, দুই নাসিকা স্ত্রী হত্যা, দুই বাহু গোহত্যা পাপ, গ্রীবা ধন অপহরণ, গলো দেশ ভ্রুণ হত্যা, বক্ষ পর স্ত্রী গমন, উদর আত্মীয়-স্বজন বধ, নাভি শরণাগত বধ, কোমর আত্মশ্লাঘা, শিশ্ন কন্যা বিক্রি, মলদ্বার গুপ্ত কথা প্রকাশ পাপ, দুই পা পিতৃ হত্যা, শরীরের রোম সমস্ত উপপাতক     এভাবে বিভিন্ন সমস্ত ভয়ংকর পাপ দ্বারা পাপ পুরুষ নির্মিত হল ! 

 

পাপ  পুরুষ কোথায় অবস্থান করেন ! 

শ্রীব্যাসদেব বললেন হে জৈমিনি  শ্রী হরির প্রকাশ এই একাদশী সমস্ত সুকর্মের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং সমস্ত ব্রতের মধ্যে উত্তম ব্রত একাদশীর প্রভাব যখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল তখন কিছুদিন পরে ভগবানের সৃষ্ট পাপ পুরুষ এসে শ্রী হরির কাছে করজোরে কাতর প্রার্থনা জানাতে লাগলো - হে ভগবান আমি আপনার প্রজা আমাকে যারা আশ্রয় করে থাকে তাদের কর্ম অনুযায়ী তাদের দুঃখ দান করাই আমার কাজ ছিল কিন্তু সম্প্রতি একাদশীর প্রভাবে আমি কিছুই করতে পারছি না বরং ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছি কেননা একাদশী ব্রতের ফলে প্রায় সব পাপাচারিরা বৈকুন্ঠের বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে হে ভগবান এখন আমার কি হবে  ।  আমি কাকে আশ্রয় করে থাকব সবাই যদি চলে যায় তবে এই মর্ত্য জগতের কি হবে? আপনি বা কার সঙ্গে এই মত্যে ক্রীড়া করবেন? 

 পাপ পুরুষ প্রার্থনা করতে লাগলো ,হে ভগবান যদি আপনার এই সৃষ্ট বিশ্বে ক্রীড়া  করবার ইচ্ছা থাকে তবে আমার দুঃখ দূর করুন  একাদশি তিথির ভয় থেকে আমাকে রক্ষা করুন  হে কৈটভনাশন, আমি একমাত্র একাদশীর ভয়ে ভীত হয়ে পলায়ন করছি মানুষ, পশু-পাখি, কীটপতঙ্গ, জল-স্থল ,বন-প্রান্তর, পর্বত-সমুদ্র, বৃক্ষ, নদী, স্বর্গ-মর্ত্য, পাতাল সর্বত্রই আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু একাদশীর প্রভাবে কথাও নির্ভয়ে স্থান পাচ্ছিনা দেখে আজ আপনার শরণাপন্ন হয়েছি হে ভগবান এখন দেখছি আপনার সৃষ্ট অনন্ত কোটি ব্রাহ্মন্ডের মধ্যে একাদশী প্রাধান্য লাভ করেছে, সেজন্য আমি কোথাও আশ্রয় পেতে পারছি না  । আপনি কৃপা করে আমাকে একটি নির্ভয়ে স্থান প্রদান করুন।   

পাপ পুরুষের প্রার্থনা শুনে ভগবান শ্রী হরি বলতে লাগলেন হে পাপ পুরুষ তুমি দুঃখ করো না যখন একাদশী  তিথি এই ত্রিভুবনকে পবিত্র করতে আবির্ভূত হবে ,তখন তুমি অন্য ও  রবিশস্য মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করবে তাহলে আমার মূর্তি একাদশী তোমাকে বধ করবে না ।  

 

পঞ্চ রবিশস্য কি কি?? 

একাদশীতে পাঁচ প্রকার রবিশস্য গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছেঃ 

১>    ধান জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন চাউল, মুড়ি, চিড়া, সুজি, পায়েস, খিচুড়ি, তালের   

        পিঠা, খই ইত্যাদি  

২>   গম  জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন~ আটা, ময়দা, সুজি, এবং বেকারি সকল প্রকার 

        আইটেম যেমন~ বিস্কুট, রুটি, হরলিক্স, চানাচুর ইত্যাদি  

৩>   যব বা ভুট্টা জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন~ ছাতু, খই, রুটি ইত্যাদি  

৪>    ডাল জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন~ মুক ডাল, মাসকলাই, খেসারি, মুসুরি, বরবটি ও  

        সিম ইত্যাদি  

৫>    তিলের তেল , সরিষার তেল, সয়াবিন তেল ইত্যাদি  

 

  উপরোক্ত এই  পঞ্চ রবিশস্য বাদেও যেখানে  তাস পাশা জুয়া খেলা হয়, মদ্যপান করা হয়, অত্যধিক আমিষ আহার করা হয় এবং অবৈধ স্ত্রী সংঙ্গ করা হয়  সেখানে এই পাপ পুরুষ অবস্থান করেন ।।