কলিযুগ দেখতে কেমন হবে। কলি যুগের লক্ষন কেমর হবে ।

কলিযুগ দেখতে কেমন হবে। কলি যুগের লক্ষন কেমর হবে ।

       একদিন পঞ্চপাণ্ডব দ্বাপর যুগের শেষ প্রান্তে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রশ্ন করেন যে "কলিযুগ কেমন হবে" ? 

তাদের প্রশ্ন শুনে ভগবান  শ্রীকৃষ্ণ পাঁচ ভাইকে পরামর্শ দেন.. 

তোমরা এক জঙ্গলের ভেতর পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন পথ দিয়ে হেঁটে আবার তাঁর কাছে ফেরত আসতে বলেন।এবং তোমরা কি কি দেখলে আমাকে বলবে। পাঁচ ভাই জঙ্গলের ভেতরে কি দেখলেন.....?? 

 

            ১) যুধিষ্ঠির ওই পথে হেঁটে যাওয়ার সময় একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করলেন -একটা হাতি কিন্তু তার দুটি শুঁড় ।এই অদ্ভুত লক্ষ্যের কথা জানালেন শ্রীকৃষ্ণের কাছে । 

 উত্তরে: শ্রীকৃষ্ণ বললেন,  

"কলি,যুগের মানুষ হবে ঠিক এই রকম । তারা মুখে বলবে এক, কিন্তু তাদের কাজ গুলো হবে সম্পূর্ণ আলাদা । 

 

          ২) ভীম তার পথে হাটতে গিয়ে দেখতে পেলেন,একটা গরু তার বাছুর কে আদর করছে চেটে চেটে,কিন্তু এত বেশি চাটছে যে বাছুরটির গায়ের ছাল উঠে গিয়ে রক্তপাত শুরু হয়েছে । 

ভীম এই কথাটা শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন। 

উত্তরেঃ শ্রীকৃষ্ণ বললেন, 

 "কলি যুগের মাতা,পিতা হবে ঠিক এইরকম। মাতা,পিতার অন্ধ স্নেহ ও অতিরিক্ত ভালোবাসাই, তাদের সন্তানদের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে। যেমন এতে সন্তানদের বিচার বুদ্ধিহীনতা ও পরনির্ভরশীল করে তুলবে। যা আগামীতে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন যাপনে তাদের বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। 

 

         ৩)  অর্জুন তার পথে হাটতে গিয়ে দেখতে পেলেন, একটি নদীতে একটি পচাগলা মৃত ছাগল আর ওই ছাগলের উপর বসে আছে একটা শকুন । কিন্তু ওই শকুনের ডানায় লেখা আছে বেদ মন্ত্র। এই কথাটা শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন। 

 

উত্তরেঃ শ্রীকৃষ্ণ বললেন,  

"কলিযুগের কিছু ভন্ড সাধকেরা হবে ঠিক এই রকমের। অর্থাৎ দেশ ও সমাজের বুকে যাদের ধার্মিক ও জ্ঞানী হিসেবে খ্যাতি থাকবে, কিন্তু তাদের প্রকৃত মানসিকতা হবে শকুনের ন্যায় । 

 

        ৪) নকুল তার পথে হাটতে গিয়ে দেখতে পেলেন, যে এক বিশালাকার পাথরের খন্ড পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু কোন বিশালবৃক্ষ তাকে আটকাতেই পারছে না । অবশেষে সামান্য একটা দুল্পা (গুল্ম) গাছের তলায় এসে আটকে যায়। এই কথাটা শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন। 

 

উত্তরেঃ শ্রীকৃষ্ণ বললেন, 

"কলিযুগের মানুষের পাপের পরিমাণ বেড়ে হবে ওই পাথরের সমান। কিন্তু কোনো মানুষ যদি এই হরিনাম রূপী দুল্পা গাছটিকে ধরতে পারে, তাহলে সর্ব বিপদ থেকে রক্ষা পাবে । 

 

         ৫) সহদেব তার পথে হাটতে গিয়ে দেখতে পেলেন একটা বিশাল গভীর কূয়া । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলেন ওই কূয়ার শেষ প্রান্তে বিন্দুমাত্র জল নেই। এই কথাটা শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন। 

 

      উত্তরেঃ শ্রীকৃষ্ণ বলেন, 

 "কলিযুগের কিছু বাড়ি হবে বিশাল আকৃতির ও মানুষের ধনসম্পত্তি থাকবে ওই গভীর কূয়ার সমান কিন্তু ওই বাড়ি ও ধনসম্পত্তি মালিকের মধ্যে থাকবেনা বিন্দু মাত্র সুখ।" 

 

           কলিযুগে পৃথিবীতে ধর্ম সংকোচিত হয়ে অধর্মের আধিক্য ঘটবে। এ যুগে পূন্য হবে একভাগ এবং পাপ হবে তিন ভাগ। মানুষ স্বল্প আয়ু, সল্প মেধা, কলহ প্রিয় নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে তাই এই কলি যুগের মানুষের উচিৎ দুল্পা (গুল্ম) গাছের তলায় আশ্রয় নেয়া তাহলে অনায়াসে এই কলিযুগের কু-প্রভাব থেকে রেহাই পাবে।