শ্রীপুরুষোত্তম মাসে অবশ্যই করণীয়ঃ দীপদান, বিশেষ সংখ্যা: ৩৩, হবিষ্যান্ন গ্রহণ, হরিনাম জপ,তুলসী সেবা ও ভাগবত শ্রবণ।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দীপদান, বিশেষ সংখ্যা: ৩৩, হবিষ্যান্ন গ্রহণ, হরিনাম জপ, ভাগবত শ্রবণ, শালগ্রাম শিলা অৰ্চন, গঙ্গা স্নান/গঙ্গাকে অর্চন করে স্নান করা ও তুলসীতে জলদান, পূজা ও পরিক্রমা প্রত্যেক নর-নারীর অবশ্যই করণীয়। বিশেষভাবে বৃন্দাবনে এই মাসে লক্ষ লক্ষ ভক্ত ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করার জন্য গিরি-গোবর্ধন ও রাধাকুণ্ড পরিক্রমা করে থাকে।
ভগবান পুরুষোত্তমের উদ্দেশ্যে দীপদান
ভগবান পুরুষোত্তমের তুষ্টির জন্য দীপদান করা কর্তব্য। সামর্থ্য থাকলে ঘৃত-প্রদীপ, নতুবা তিল- তৈল-প্রদীপ দেয়া উচিত। ভগবান পুরুষোত্তম কে যেভাবে প্রদীপ দেখাবেন- ভগবানের চরণে চারবার, নাভি মন্ডলে দুইবার, এবং মস্তকে তিনবার,এনং তারপর সর্বাঙ্গে সাতবার দেখাতে হবে।
যোগো জ্ঞানং তথা সাংখ্যং তন্ত্রাণি সকলান্যপি ।
পুরুষোত্তমদীপস্য কলাং নাইন্তি ষোড়শীম্ ॥
অনুবাদঃ
অষ্টাঙ্গযোগ, ব্রহ্মজ্ঞান ও সাংখ্যজ্ঞান এবং সমস্ত তান্ত্রিক ক্রিয়া পুরুষোত্তম মাসে দীপদানের ষোড়শী কলারও তুল্য হয় না।
হরি কথা শ্রবণ
পুরুষোত্তম-মাসে ভক্তিপূর্বক শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থ শ্রবণ করবে। ভাগবত শ্রবণের পুণ্য বিধাতাও বলতে পারে না। ভক্তগণ শ্রী শালীগ্রাম-শিলার অর্জন করবেন। একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তির উচিত, কোন শুদ্ধভক্তের মুখনিঃসৃত কৃষ্ণ কথা শ্রবণে নিজেকে নিয়োজিত করে, সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করা ও তার লীলাবিলাস সম্বন্ধে অন্য ভক্তদের নিকট আলোচনা করা। হৃদয়ে সর্বদা কৃষ্ণচিন্তা করার মাধ্যমে তৃপ্ত হওয়া উচিত।
বিশেষ সংখ্যা: ৩৩
এ মাসে ৩৩ সংখ্যাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাধাকৃষ্ণের উদ্দেশে ৩৩ বার দন্ডবৎ প্রণাম করবেন, রাধাকৃষ্ণের উদ্দেশে ৩৩ সংখ্যক প্রদীপ দান করবেন, রাধাকৃষ্ণেরকে ৩৩ সংখ্যক ফল ও পুষ্প প্রদান করবেন। অর্থাৎ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যেকোনো সেবায় ৩৩ সংখ্যার ব্যবহার করবেন। তাহলে ভগবান অনেক খুশি হন এবং ভগবানের অনেক কৃপা আশীর্বাদ লাভ করা যায় এর ফলে ভগবত ধাম অর্থাৎ গোলক বৃন্দাবনে বাস করবেন হরিবোল ।
(পুরাণে বর্ণিত আছে, এ মাসে কৌশিক মুনি ও তাঁর পুত্র মৈত্রেয় মুনি ব্রাহ্মণ গণকে ৩০ সংখ্যর আপুপ দান করেছিলেন। আপ্প-আতপ ছাল,শর্করা ও মৃত দ্বারা তৈরি পিষ্টক বিশেষ)
হবিষ্যান্ন গ্রহণ পদ্ধতি
পুরুষোত্তম ব্রতী হবিষ্যান্ন ভোজন করবেন। গম, আতপ চাল, মুগডাল, যব, তিল, মটর, কাঙ্গলি তণ্ডুল, উড়ী তণ্ডুল, বেতোশাক, হেলেঞ্চা শাক, আদা, কালশাক, মূলক, কন্দমূল, কাঁকুড়, কলা, সন্ধব ও সমুদ্র-লবণ, দধি, ঘৃত, অনুষ্কৃত দুগ্ধসার, কাঁঠাল, আম, হরিতকী, পিপ্পলী, জিরা, শুঁঠ, তেঁতুল, অমুক, আতা, আমলকী-ফল, ইক্ষুজাত চিনি, মিশ্রি অতৈলপক্ক ব্যঞ্জনাদি দ্রব্য এই সমস্ত হরিষ্যান্ন। উপবাস ও হবিষ্যানে একই প্রকার ফল।
যাদের পক্ষে একেবারেই করা অসম্ভব তারা এই মাসে অবশ্বই ভগবান কে নিবেদিত প্রসাদ গ্রহণ করবে এবং অধিক সংখক হরিনাম জপ করবে, ভাগবত পাঠ-কীর্তন এবং তুলসী সেবাে ইত্যাদি করবে। যদি কেউ এই পুরুষোত্তম মাসে এসব নিয়ম মেনে চলে তারে যে পুণ্য অর্জন হবে তা গননা করে শেষ করা যাবে না। পুরুষোত্তম মাস মাহাত্ম্য